-

আরেসিবো বার্তা কি? – Arecibo Message

আজ থেকে ৪৪ বছর আগে ঠিক আজকের এই দিনে, ১৯৭৪ সালে একদল মহাকাশ বিজ্ঞানী পুয়ের্তো রিকোর আরেসিবো পর্যবেক্ষণাগারে একত্র হয়েছিলেন, পৃথিবী থেকে অন্য গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর সাথে যোগাযোগ করার জন্য, আরেসিবো রেডিও টেলিস্কোপের মাধ্যমে ‘এম১৩’ (প্রায় ৩০০,০০০ তারার সমষ্টি ‘এম ১৩’ নামে পরিচিত) নক্ষত্রপুঞ্জের উদ্দেশ্যে একটি রেডিও বার্তা প্রেরণ করার জন্য।

তাদের প্রেরণকৃত সেই রেডিও বার্তাটিই হচ্ছে আরেসিবো বার্তা। প্রেরণকৃত সেই আরেসিবো বার্তাটি  ছিল তিন মিনিট দীর্ঘ। তিন মিনিট দীর্ঘ সেই বার্তাটিতে ঠিক ১,৬৭৯ টি বাইনারি সংখ্যা ছিল (দুটি মৌলিক সংখ্যার) যা কিনা ২৩ টি কলামে একটি গ্রিডে ৭৩ টি সারিতে সাজানো যেতে পারে।

ঐতিহাসিক সেই রেডিও বার্তাটি প্রেরণের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বের কাছে তৎকালীন সময়েই আরেসিবো তুলে ধরেছিল তাদের আপগ্রেডড রেডিও টেলিস্কোপকে। আপনি জানলে হয়তো অবাক হবেন, টেলিস্কোপটির ব্যাসার্ধ ১০০০ ফুটেরও বেশি ছিল, যা কিনা তৎকালীন সময়ে বিশ্বের সর্ব বৃহত্তম এবং সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ ছিল।

আরেসিবো বার্তাটি প্রেরণের পর তৎকালীন আরেসিবোর গবেষণা সহযোগী পর্যবেক্ষক কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ডোনাল্ড ক্যাম্পবেল বলেছিলেন “এটি সত্যিই একটি প্রতীকী ঘটনা ছিল, আমরা সত্যিই এটি করে দেখাতে পেরেছি”।

আরেসিবো বার্তাটি তার কাংখিত গন্তব্য পৌঁছানোর জন্য প্রায় ২৫,০০০ বছর সময় নেবে। ২৫,০০০ বছর পর যদি বার্তাটি ‘এম১৩’ (প্রায় ৩০০,০০০ তারার সমষ্টি ‘এম ১৩’ নামে পরিচিত) নক্ষত্রপুঞ্জে পৌঁছেও যায় তাহলে অপর প্রান্ত থেকে আসা একটি উত্তরের জন্য মানবজাতিকে দীর্ঘকাল অপেক্ষা করতে হবে।

আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে কতকাল? যেহেতু মাত্র ৪৪ বছর আগে বার্তাটি প্রথমবারের মত প্রেরণ করা হয়েছে, এতদিনে বার্তাটি মাত্র ২৫৯ ট্রিলিয়ন মাইল অতিক্রম করেছে। আরেসিবো বার্তাটিকে তার কাংখিত গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে সর্বমোট ১৪৬,৯৬৫,৬৩৮,৫৩১,২১০,২৪০ এর চেয়েও বেশি মাইল অতিক্রম করতে হবে।

যদি আরেসিবো বার্তা কাংখিত গন্তব্যে পৌঁছে যায় তাহলে হয়তো বা একদিন দেখা হয়েও যেতে পারে ছায়াপথের সেই প্রতিবেশির সাথে, সেই আশা নিয়েই না হয় অপেক্ষায় থাকুক মানবজাতি।

আর হ্যা! অনেকের মনেই হয়তো বা গুগল ডুডল দেখে প্রশ্ন জেগেছে  গুগল এই আরেসিবো বার্তার ডুডল দেখাচ্ছে কেন? আজ ১৬ নভেম্বর, আরেসিবো বার্তা প্রেরণের ৪৪ তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষেই গুগল তাদের ডুডল হিসেবে এটি ব্যাবহার করেছে।

 লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।

সর্বশেষ প্রকাশিত