-

মনের মাঝে তুমি Movie Review

“আকাশে বাতাসে চল সাথী উড়ে চল ডানা মেলে” এই গান শোনে নাই খুব কম মানুষই কেননা চ্যানেলের বিভিন্ন নাচের অনুষ্ঠানের প্রধান গানই থাকতো এটা বিশেষ করে বিটিভিতে।এছাড়া স্কুল কলেজের মিউজিকাল প্রোগ্রামে কেউ নাচবে সবার আগেই এই গানের নামটা চলে আসে।তো কথা বলছিলাম ২০০৩ সালে বেশ আলোড়ন তৈরি করা এক সিনেমা যেটা নির্মিত হয়েছিলো বাংলাদেশ,ভারতের যৌথ আয়োজনে।হ্যা “মনের মাঝে তুমি” সিনেমাটি এসেছিলো বাংলাদেশে এমন সময় যখন দেশের সিনেমার নাজেহাল অবস্থা, দর্শক তখন হলবিমুখ! হল মানেই সকলের মনে সবার আগে আসতো অশ্লীলতার কথা।ঠিক সেই সময় মনের মাঝে তুমি সিনেমাটি কেমোথেরাপি হিসেবে কাজ করেছিলো।আর সক্ষম হয়েছিলো দর্শককে আবারো হলমুখী করতে।যেমন ছিলো সিনেমার গল্প তেমন ছিলো এর পরিচালনা ঠিক তেমনি সঠিক কাজ করেছিলেন সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীবৃন্দ তাদের সুনিপুণ অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে।এই সিনেমার মাধ্যমে সেই সময় অনেক পরিচালক স্বপ্ন দেখা শুরু করেন এবং পরবর্তী ইতিহাস আপনারা জানেন,পেয়েছিলাম আমরা আরো ভালো মানের কিছু সুস্থ ধারার সিনেমা।এক কথায় সে সময় এই সিনেমা সর্বমহলের মানুষকে হলে টেনে এনেছিলো এবং দর্শক সমালোচক থেকে পেয়েছিলো ভূয়সী প্রশংসা।এ সিনেমার গল্প এবং অভিনয় নিয়ে আজ আপনাদের মাঝে আলোচনা করবো আশা করছি সাথে থাকবেন।

অভিনয়দক্ষতা-
রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সিদ্দিকঃ আমার মতে ইনি এক মাত্র নায়ক যিনি ছোট এবং বড় পর্দায় সমান ভাবে জনপ্রিয়। তার অভিনয়ে ছিলো এমন এক ধারা যা তাকে দিয়েছিলো “লাভার বয়” খেতাব।সবধরণের সিনেমার ক্ষেত্রে তার অভিনয় ছিলো দৃষ্টিনন্দন। বাংলাদেশের তিনজন বিখ্যাত অভিনেত্রী চাচাতো ভাই তিনি বিশেষ করে ববিতার হাত ধরেই তার সিনেমা জগতে আশা যদিও রিয়াজের অভিনয় জগতে আশার অনেক বড় ভূমিকা পালন করেন দেশের সিনেমার জনপ্রিয় শক্ত মুষ্ঠির অধিকারী প্রয়াত অভিনেতা এবং প্রযোজক জসিমের।১৯৯৫ সালে তার অভিষেক হলেও তার দর্শকপ্রিয়তা প্রকাশ পায় ১৯৯৬ সালে প্র‍য়াত নায়ক সালমান শাহ এর প্রিয়জন সিনেমায় তিনি সুযোগ পান এবং চেনান নিজের জাত।এরপরে আমরা পেয়ে যাই বাংলা সিনেমার লাভার বয়।মনের মাঝে তুমি সিনেমায় রিয়াজ তার অভিনয় বলে জয় করেন দুর্যোগ সময়ের আশার আলোর খেতাম যা আজো অম্লান। এ সিনেমায় এতো বেশি সাবলীলতা পাওয়া যাবে যা আপনাকে করবে মুগ্ধ অবশ্যই আপনাকে তার ভক্ত হতে বাধ্য করবেন।



দিলারা হানিফ রীতাঃ মাত্র ১৬ বছর বয়সে রিয়াজের বিপরীতে “এ জীবন তোমার আমার” শিরোনামের এই সিনেমার মাধ্যমে “পূর্ণিমার” চলচ্চিত্রে আগমন। তখনই বোঝা গিয়েছিলো ইনি আসলেই দেশের সামনের ভবিষ্যৎ, এই ধারণাকে প্রমাণ করে দিয়েছেন ২০০৩ সালের তার অভিনীত জনপ্রিয় সিনেমা মনের মাঝে তুমির মাধ্যমে।মাত্র ২২ বছর বয়সে তার জনপ্রিয়তা হয়ে যায় আকাশ চুম্বী,চোখে পরে যায় প্রয়াত গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম স্যারের চোখে আর আমরা পেয়ে যাই একটা মাষ্টারপিস সিনেমা মেঘের পরে মেঘ 😍
মনের মাঝে তুমি সিনেমায় পূর্ণিমা এতোটাই প্রাণবন্ত ছিলেন যা দেখে বহু মানুষ আজকালের আধুনিক খাদ্য ক্রাশ খেয়েছিলেন,যা আজ ২০১৮ তেও বহু মানুষ খাচ্ছেন।হাসি লাগে তখন যখন কেউ বলে পূর্ণিমাকে আগে কেউ চিনতো না 😂

কাহিনীসংক্ষেপঃ
সিনেমার প্রথমেই দেখা যাবে দুই কিশোর-কিশোরীর উচ্ছ্বাসতা।কি দারুণ তাদের মেলামেশা একসাথে বৃষ্টিতে ভেজা এক সাথে দোলনায় চড়া।মানে শুরুতেই আপনাকে দারুণ এক অনুভূতি দিবে যা আপনাকে সিনেমার সামনের বসিয়ে রাখবে পরে কি হবে তা দেখার জন্য।গল্পের মোড়ে ওড়া হঠাৎ হাড়িয়ে যায় একে অপরের থেকে আর ওদের দেখা হয় না কিন্তু ওদের মাঝে ভালোবাসা -বন্ধুত্ব থেকেই যায় কিন্তু ওরা সত্যিই আলাদা হয়ে যায়! 😞 ওরা কি আবার নিজের খুঁজে পায়? কি কারণেই বা ওরা আলাদা হয়ে যায়? সত্যিই কি তারা তাদের বাল্যকালের ভালোবাসাকে জীবনের শেষ অবধি নিয়ে যেতে পারেন? এই প্রশ্ন গুলোর উত্তরের একটাই উপায় আপনার কাছে আছে যদি সিনেমা না দেখে থাকেন আজিই দেখে নিন ২০০৩ সালের আশার আলোর প্রদীপ খেতাব পাওয়া সিনেমা “মনের মাঝে তুমি”। আসলেই ভালোবাসা শক্ত হলে একসময় না একসময় ইহা পক্ত হবেই 

চলুন জেনে আসি সিনেমাটির জন্য ক্যামেরার সামনে এবং পেছনে কাদের কাদের অবদান ছিলো
“মনের মাঝে তুমি”
পরিচালকঃ মতিউর রহমান পানু
রচয়িতাঃ এস এম রাজু
প্রযোজকঃ মতিউর রহমান পানু,আব্বাস উল্লাহ সিকদার।
শ্রেষ্ঠাংশেঃ রিয়াজ,পূর্ণিমা,যীশু সেনগুপ্ত,তনু রায় আরো অনেকে।
ধরণঃ কমেডি,রোমান্স।
আয়ঃ ৩.৫ কোটি টাকা
ব্যাপ্তিকালঃ ১৫০ মিনিট
মুক্তিসালঃ ১৫ আগষ্ট, ২০০৩ইং
দেশঃ বাংলাদেশ,ভারত
আইএমডিবিঃ ৭.২/১০
ব্যক্তিগত মতামতঃ ৯.০/১০

সর্বশেষ প্রকাশিত